সোনালু গাছ এর ভেষজ গুণা গুণ এবং এর ব্যবহারসহ প্রস্তুত প্রনালী

 সোনালু গাছ, যা *Cassia fistula* নামে পরিচিত, একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এটি বাংলাদেশে এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। সোনালু গাছের বিভিন্ন অংশ যেমন পাতা, ফুল, বাকল, এবং ফল ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এটি বিশেষত তার রোগ নিরাময় ক্ষমতা ও প্রদাহনাশক গুণাবলীর জন্য পরিচিত।


### সোনালু গাছের ভেষজ গুণাবলী

1. **প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট**: সোনালু গাছের বিভিন্ন অংশে প্রদাহনাশক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়ক।

2. **কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণ**: সোনালু গাছের শুকনো ফলের শাঁস প্রাকৃতিকভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি প্রাকৃতিক রেচক (laxative) হিসেবে কাজ করে।

3. **ত্বকের সমস্যা নিরাময়**: এর পাতা ত্বকের রোগ যেমন খোসপাঁচড়া, ফোস্কা, এবং সংক্রমণ নিরাময়ে সহায়ক।

4. **জ্বর নিরাময়ে**: সোনালুর বাকল জ্বর কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

5. **বাত ও গেঁটেবাতের ব্যথা উপশম**: সোনালুর পাতার পেস্ট বা তেল ব্যবহার করলে এটি গেঁটেবাত ও বাতের ব্যথা কমাতে সহায়ক।

6. **পেটের সমস্যার সমাধান**: সোনালু গাছের বিভিন্ন অংশ পেটের সমস্যা যেমন অম্বল, গ্যাস, ও বদহজমের জন্য উপকারী।


### সোনালু গাছের ব্যবহার

1. **কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে**:

   - সোনালুর শুকনো ফলের শাঁস পানির সাথে মিশিয়ে খেলে এটি রেচক হিসেবে কাজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

2. **জ্বর কমাতে**:

   - সোনালুর বাকল সেদ্ধ করে পান করলে জ্বরের উপশম হয়।

3. **ত্বকের সমস্যায়**:

   - সোনালুর পাতা বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগালে সংক্রমণ, ফোস্কা বা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় আরাম পাওয়া যায়।

4. **বাতের ব্যথায়**:

   - এর পাতা গরম করে ব্যথার স্থানে লাগালে আরাম পাওয়া যায়।


### সোনালু গাছ ব্যবহার করে ওষুধ প্রস্তুতের প্রণালী


#### ১. **কোষ্ঠকাঠিন্যের ওষুধ প্রস্তুত প্রণালী**:

   - সোনালুর শুকনো ফল সংগ্রহ করে এর শাঁস বের করে নিন।

   - প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১-২ গ্রাম শাঁস সামান্য গরম পানির সাথে মিশিয়ে পান করুন।

   - এটি প্রাকৃতিক রেচক হিসেবে কাজ করবে।


#### ২. **ত্বকের সমস্যায় সোনালু পাতার পেস্ট**:

   - সোনালুর তাজা পাতা নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।

   - আক্রান্ত ত্বকের অংশে এই পেস্ট লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট।

   - এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের সংক্রমণ ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করবে।


#### ৩. **জ্বর কমানোর জন্য সোনালু বাকলের সেদ্ধ পানি**:

   - সোনালুর বাকল সংগ্রহ করে পানিতে ফুটিয়ে সেদ্ধ করুন।

   - সেদ্ধ পানি ছেঁকে নিয়ে দিনে দুইবার পান করুন। এটি জ্বর কমাতে সহায়ক।


**সতর্কতা:** সোনালু গাছের অংশগুলি ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন, কারণ অতিরিক্ত ব্যবহার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন