কেফির (Kefir) স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী এবং এর প্রস্তুত প্রনালী

 **কেফির (Kefir)** হলো একটি গাঁজানো পানীয় যা মূলত দুধ থেকে তৈরি হয়। এটি প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি মূলত পূর্ব ইউরোপ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার অঞ্চলগুলিতে প্রচলিত। কেফির তৈরির জন্য "কেফির দানা" নামক একটি গাঁজানো স্টার্টার ব্যবহার করা হয়, যা ব্যাকটেরিয়া এবং খামিরের মিশ্রণ।


### **কেফিরের স্বাস্থ্যের উপকারিতা:**


1. **প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ:**  

   কেফিরে প্রচুর প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া এবং খামির থাকে, যা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।


2. **ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি:**  

   কেফির শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। প্রোবায়োটিক এবং অন্যান্য উপাদানগুলি সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।


3. **হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী:**  

   কেফিরে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন K2 থাকে, যা হাড়কে মজবুত রাখতে সহায়ক।


4. **পাচনতন্ত্রের উন্নতি:**  

   এতে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া হজমের উন্নতি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট ফাঁপার মতো সমস্যা কমায়।


5. **ল্যাকটোজ সহ্য করার ক্ষমতা বৃদ্ধি:**  

   ল্যাকটোজ অ্যালার্জিতে ভুগছেন এমন অনেকেই কেফির খাওয়ার মাধ্যমে উপকার পেয়ে থাকেন কারণ কেফিরে ল্যাকটোজ খুব কম থাকে এবং ব্যাকটেরিয়া এটিকে ভেঙে দেয়।


6. **চামড়ার সমস্যা নিরাময়ে সহায়ক:**  

   একজিমা, ব্রণ এবং অন্যান্য চামড়ার সমস্যায় কেফির উপকারী হতে পারে কারণ এটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ধারণ করে।


### **কেফির তৈরির প্রণালী:**


#### উপকরণ:

- ২ কাপ দুধ (গরুর দুধ, ছাগলের দুধ বা উদ্ভিজ্জ দুধ হতে পারে)

- ১-২ টেবিল চামচ কেফির দানা (স্টার্টার)


#### প্রস্তুত প্রণালী:

1. একটি পরিষ্কার কাচের জারে ২ কাপ দুধ ঢালুন।

2. এতে ১-২ টেবিল চামচ কেফির দানা যোগ করুন।

3. জারের মুখ ঢেকে দিন, তবে পুরোপুরি বন্ধ করবেন না যাতে কিছু বাতাস ঢুকতে পারে। একটি পাতলা কাপড় বা কাগজের সাহায্যে মুখ ঢেকে রাখুন।

4. জারটি ২৪ ঘণ্টার জন্য রুম তাপমাত্রায় রেখে দিন। সময় বাড়ার সাথে সাথে দুধ গাঁজন হবে এবং কেফির তৈরি হবে।

5. ২৪ ঘণ্টা পরে, একটি পরিষ্কার ছাঁকনির সাহায্যে কেফির থেকে দানাগুলো আলাদা করুন।

6. কেফির দানাগুলো সংরক্ষণ করে পরবর্তী ব্যাচের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। তৈরি কেফির ফ্রিজে রাখুন এবং ঠাণ্ডা অবস্থায় পান করুন।


### **বিঃদ্রঃ:** 

- গাঁজনের সময় অনুযায়ী কেফিরের স্বাদ বদলায়, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রাখলে স্বাদ আরও টক হতে পারে।

- যারা দুধ থেকে এলার্জি বা ল্যাকটোজ সমস্যা ভোগেন তারা বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ দুধ যেমন নারিকেল দুধ বা বাদামের দুধ দিয়ে কেফির তৈরি করতে পারেন।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন