**হাড়জোড়া গাছের ঔষধীগুণ ও ব্যবহার:**
**বৈজ্ঞানিক নাম:** *Cissus quadrangularis*
**অন্য নাম:** অষ্টিসন্ধানী, ভাঙ্গা হাড়, হাডজোড়া
হাড়জোড়া গাছটি আয়ুর্বেদিক এবং ইউনানী চিকিৎসায় অনেক পুরনো একটি উদ্ভিদ, যা মূলত হাড় মেরামতের জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নতকারী উপাদান রয়েছে। এছাড়াও হাড়জোড়া গাছ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা যেমন জয়েন্ট পেইন, হাড় ক্ষয়, প্রদাহ ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।
### **হাড়জোড়া গাছের ঔষধীগুণ:**
1. **হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ ও হাড়ের ক্ষত মেরামত:**
- হাড় ভাঙা বা ফাটলে দ্রুত সেরে ওঠার জন্য এটি খুব কার্যকর।
- ক্যালসিয়াম শোষণ বাড়ায়, যা হাড়ের মজবুতিতে সহায়ক।
2. **প্রদাহ ও ব্যথা উপশম:**
- এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান প্রদাহ ও ব্যথা কমায়, বিশেষত হাড় ও জয়েন্টের ক্ষেত্রে।
3. **ওজন হ্রাসে সহায়ক:**
- এটি বিপাক বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ফ্যাট কমাতে সহায়তা করে।
4. **পাচনতন্ত্রের উন্নতি:**
- হাড়জোড়া পাচন ক্রিয়াকে সক্রিয় করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে।
5. **হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ:**
- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মতো খনিজ পদার্থ হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।
### **ব্যবহার:**
1. **হাড়ের সমস্যা:**
- হাড় ভাঙা, ফাটল, বা জয়েন্টে ব্যথার জন্য হাড়জোড়া গাছের রস বা পাউডার খাওয়া হয়।
- এর কাণ্ডের রস বা পেস্ট ভাঙা স্থানে লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করা যেতে পারে।
2. **পাচনতন্ত্রের উন্নতি:**
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে হাড়জোড়া গাছের রস খাওয়া পেটে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে পারে।
3. **ওজন হ্রাসে:**
- এর রস বা পাউডার ওজন কমানোর জন্য সকালে বা সন্ধ্যায় খাওয়া যেতে পারে।
4. **প্রদাহ বা ব্যথায়:**
- প্রদাহ এবং ব্যথা দূর করতে এর পেস্ট আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করা যেতে পারে।
### **প্রস্তুত প্রণালী:**
1. **হাড়জোড়া গাছের রস:**
- গাছের কাণ্ড সংগ্রহ করে তা পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।
- এরপর কাণ্ডটিকে ছোট ছোট টুকরা করে ব্লেন্ড করে বা পিষে রস বের করে নিতে হবে।
- প্রতিদিন ১০-১৫ মিলে হাড়জোড়া গাছের রস খাওয়া যেতে পারে।
2. **হাড়জোড়া গাছের পাউডার:**
- গাছের কাণ্ড শুকিয়ে তা গুঁড়ো করে পাউডার তৈরি করা হয়।
- এই পাউডার প্রতিদিন সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে ১-২ চা চামচ খাওয়া যেতে পারে।
**সতর্কতা:**
হাড়জোড়া গাছ ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষত যদি কোনো দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন